Site icon

নতুন পাঁচ উপদেষ্টার শপথে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা

নতুন পাঁচ উপদেষ্টার শপথে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা

নতুন পাঁচ উপদেষ্টার শপথে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আলোচনা বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন পাঁচজন উপদেষ্টা যুক্ত হতে যাচ্ছেন, যা সরকারের কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নতুন উপদেষ্টারা শিগগিরই শপথ নেবেন বলে জানা গেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন ও বৈধতা নিয়ে বিতর্ক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা চলছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত হওয়ায় এর আইনি ভিত্তি কতটা মজবুত তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে বিতর্ক রয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ বন্ধ থাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সরকারের বৈধতা প্রশ্নে জনমত সংগ্রহ, গণ-আন্দোলন, এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।

নতুন উপদেষ্টাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব

নতুন পাঁচজন উপদেষ্টাকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে সরকারের কার্যকরী ভূমিকা আরও বিস্তৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই উপদেষ্টাদের দায়িত্ব হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করা, এবং সরকারের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হবে স্বচ্ছ ও সুশাসন নিশ্চিত করে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখা। উপদেষ্টারা প্রত্যেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, যা দেশের বর্তমান সংকট মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে আনতে ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে চায়। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও গণআন্দোলনের পটভূমিতে গঠিত এই সরকারকে দেশের অনেকেই পরিত্রাণের পথ বলে মনে করছেন। সরকারের পরিকল্পনা মূলত একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে পুনরায় গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনরুদ্ধার করা।

গণঅভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

বর্তমান সরকার গঠনের পেছনে গণঅভ্যুত্থানের বড় ভূমিকা রয়েছে। জনসাধারণের আন্দোলনের চাপ থেকে এই সরকার গঠিত হয়েছে বলে সরকার পক্ষের দাবি। তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় এ নিয়ে সমালোচনা রয়ে গেছে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলেও এটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ তৈরি করতে পারবে কি না, তা দেখার বিষয়।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ড. ইউনূসের মতো একজন নোবেল বিজয়ী নেতৃত্বে থাকায় আন্তর্জাতিক মহলেও এই সরকার নিয়ে আগ্রহ ও প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সরকারের উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম নিয়ে কৌতূহলী। তারা দেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছে।

চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বিরোধ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এই সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ প্রয়োজন। বিভিন্ন বিরোধী দল এবং রাজনৈতিক সংগঠনকে একত্রে নিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের মধ্যে আশা এবং সংশয় দুই-ই বিদ্যমান। দেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা থেকে উত্তরণে এই সরকার কতটা সফল হতে পারে, তা নির্ভর করছে তার কার্যকর ভূমিকা ও পারস্পরিক সমঝোতার উপর।

Exit mobile version